
অনলাইন ডেস্ক : আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজী সেলিম দেশে ফিরেছেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হয়েও চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়া নিয়ে নানা আলোচনা- সমালোচনার মধ্যেই দেশে ফিরলেন তিনি।
নানান হিসাব-নিকাশ মিলাতে হলো হাজি সেলিমকে। একদিকে তার হাজার কোটি টাকার সম্পদ। অন্যদিকে স্ত্রী-সন্তান আর আরেক দিকে দলীয় রাজনীতি। সব কোল ঠিক রাখতে হলো তাকে।
বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে তিনি থাই এয়ারওয়েজের একটি উড়োজাহাজে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান বলে তথ্য মিলেছে। ইমিগ্রেশন পুলিশ সূত্র ও হাজি সেলিমের ব্যক্তিগত সহকারী মহিউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আজ। একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, দেশে ফিরে হাজি সেলিম লালবাগে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁর নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা শাহানা বেগমের জানাজায় অংশ নেন। বেলা দেড়টার দিকে লালবাগের তালগাছা শাহী জামে মসজিদে ওই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানাগেছে।
এদিকে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় ১০ বছরের সাজা নিয়ে দেশ ছেড়েছেন আওয়ামী লীগের এমপি হাজী সেলিম। কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে শনিবার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে যান সেলিম। সোমবার হজী সেলিমের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
হাজী সেলিম তিনটি গাড়ির একটি বহর নিয়ে আজিমপুর কবরস্থানে যান। সেখানে কবর জিয়ারত শেষে যান বিমানবন্দরে। তবে এ সময় তার সঙ্গে পরিবারের কেউ ছিলেন না। এছাড়া গাড়ির চালকেরও আগে থেকে জানতো না তারা কোথায় যাচ্ছেন বলেও জানায় ওই ঘনিষ্ঠ সূত্র। সূত্রটি জানায়, হাজী সেলিম চিকিৎসার কথা বলে ব্যাংকক গিয়েছেন। তার সফরসঙ্গী হিসেবে ঘনিষ্ঠ কেউই যাননি। তার যাওয়ার আগে বা পরে ঘনিষ্ঠ কেউ ব্যাংকক গিয়ে থাকতে পারেন।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে হাজী সেলিমের ১০ বছর সাজা বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ গত ১০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হয়। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেরিমকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এ আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সময়সীমার মধ্যেই দেশ ছেড়লেন তিনি।
দুর্নীতির মামলায় এক যুগ আগে বিচারিক আদালতের রায়ে হাজী সেলিমের ১৩ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। সাজার রায়ের বিরুদ্ধে হাজী সেলিম হাইকোর্টে আপিল করেন। এই আপিলের শুনানি নিয়ে গত বছরের ৯ মার্চ বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন। এরপর ১০ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম বলেন, সাজাপাপ্ত আসামি হওয়ায় হাজী সেলিমের সংসদ সদস্য পদে আর নেই বলে আমি মনে করি। একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিদেশে যেতে পারেন না। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি হওয়ার কারণেই বিদেশ যেতে পারেননি। হাজী সেলিমেরও বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই। হাজী সেলিমের এই হঠাৎ দেশত্যাগ নিয়ে সমালোচনা হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েও দেশত্যাগের আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
ঢাকা, ০৫ মে (নাগরিকজার্নাল.কম)//এসএইচএফ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: