অশ্বগন্ধার সঙ্গে বন্ধুত্ব করুন, আজীবন সতেজ থাকুন

স্টাফ রিপোর্টার | ১১ জুন ২০২৫ ১৩:০৭ আপডেট: ১১ জুন ২০২৫ ১৩:১৬

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশিত: ১১ জুন ২০২৫ ১৩:০৭

প্রকৃতিতে অশ্বগন্ধার মত মূল্যবান শক্তিশালী উপাদান সঞ্চিত রয়েছে যে শক্তিকে কাজে লাগিয়ে জনস্বাস্থ্য সেবায় গত ৩০০০ বছর ধরে নানান রোগের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ঔষধি ভেষজ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে রোগীরা রোগমুক্ত জীবনের স্বপ্ন দেখার পাশাপাশি স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানোর সুযোগ পাচ্ছে।

অশ্বগন্ধার ইউনানী পারিভাষিক নাম এসৃগন্দ, আয়ুর্বেদে বলা হয়-বলদা বা আয়ুর্বেদের নয়নমনি, ইরেজি নাম উইন্টার চেরি, (Winter cherry) শীতকালীন চেরি, বৈজ্ঞানিক নাম ওইথানিয়া সমনিফেরা ডুনাল, Withania somnifera Dunal] এটি একটি ল্যাটিন শব্দ, যার অর্থ ঘুমের উপরে প্রভাব বিস্তারকারী। অসাধারণ কার্যকারীতার জন্য বিশ্বের অন্যতম ভেষজ অ্যাডাপটোজেন এই অন্ধা, যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। বিশ্বের বিখ্যাত টনিক জিনসেং ও সঙ্গে লনীয়, তাই অ্যাস্টাগ্যালাসের অশ্বগন্ধাকে ইন্ডিয়ান জিনসেং হিসেবেও অভিহিত করা হয়। প্রকৃতির এই শক্তিশালী ঔষধি ভেষজ উদ্ভিদটি মানব দেহের বহু সমস্যার সমাধান ।

অশ্বগন্ধার নামকরনের পরিচিতিঃ অশ্বগন্ধায় শীতকালে ফল ধরে তাই (Winter cherry ) শীতকালীন চেরী, অশ্বগন্ধা নিয়মিমিত খেলে সঞ্জীবনী শক্তি বৃদ্ধি পায়। অশ্বগন্ধার পাতা পানিতে সেদ্ধ করলে ঘোড়ার মূত্রের মতো গন্ধ বেরোয় বলে এই উপ-মহাদেশে একে অশ্বগন্ধা বলা হয়।

অশ্বগন্ধার ব্যবহার্য অংশঃ মূল, পাতা, ফুল, ফল, কান্ডের বাকল ও ডাল সবই ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

অশ্বগন্ধার পরিচিতিঃ ৩৫-৭৫ সেমি (১৪-৩০ ইঞ্চি) ক্রমবর্ধমান হয়ে গাছটি দুই-আড়াই হাত উঁচু ও শাখাবহুল, ফুল ছোট, সবুজ এবং ঘন্টা আকৃতির ও ছোট মটরের মত ফল হয়। ফল পাকলে কমলার মত কিছুটা লাল হয়।

অশ্বগন্ধার প্রাপ্তিস্থানঃ অশ্বগন্ধা নামের চিরহরিৎ গুল্মটি মূলত বাংলাদেশ ও প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল যেমন: পাঞ্জাব, গুজরাট, রাজস্থানের বিস্তীর্ণ অঞ্চল ও দক্ষিন পূর্ব এশিয়ার শ্রীলঙ্কা, নেপাল, পাকিস্তান, মধ্যপ্রাচ্যের শুষ্ক অঞ্চল এবং আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন ও আমেরিকায় জন্মায়।

অশ্বগন্ধার ফাইটোকেমিক্যালসঃ অশ্বগন্ধার নির্যাসে প্রাপ্ত প্রধানত ৩৫ ধরনের ফাইটোকেমিক্যাল উপাদান আছে। অ্যালকালয়েড, স্ট্রেরয়ডাল্ ল্যাক্টস, ট্যানিস, স্যাপোনিস, উইথাফেরিন এ, ডি, ই, উইথানন, উইথানোলাইড, গ্লাইকোউইথানোলাইড, উইথাসেমিডায়নোন এবং অ্যালকালয়েড- কাসকোহাযগ্রিন, অ্যানাহাযগ্রিন, অ্যানাফেরিন, ট্রোপিন, আইসোপেলাটিরিন, ৩-ট্রোকাইলিটি গ্লোয়েট ইত্যাদি বায়োঅ্যাক্টিভ রাসায়নিক পদার্থ বিদ্যমান।

অশ্বগন্ধার পুষ্টিগত মানঃ

প্রতি ১০০ গ্রাম অশ্বগন্ধার গুড়া বা পাউডারে আছে-

১. এনার্জি- ২০০ কিলো ক্যালোরি

২. কার্বোহাইড্রেড-৭৫ গ্রাম

৩. ফাইবার-২৫ গ্রাম

মানবদেহে অশ্বগন্ধার প্রভাবঃ

১। অনিদ্রা দূর করেঃ অশ্বগন্ধার পাতা ও মূলের নির্যাস স্নায়বিক বিভিন্ন রোগের সমাধান হিসেবে কাজ করে, ক্লান্তি দূর করে সঞ্জীবনী শক্তি পুনরুদ্ধার করে, স্নায়ুকে আরাম দেয়ার ফলে অনিদ্রা দূর করে-ঘুম ভাল হয়। বিভিন্ন গবেষনায় প্রমানিত যে, অশ্বগন্ধা ব্যবহারে অ্যালজিমারস রোগাক্রান্তের স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বৃদ্ধি পায় ।

২। স্ট্রেস কমায়ঃ অশ্বগন্ধায় অ্যানজাইলটিক উপাদান উপস্থিত থাকে তাই স্নায়ুতন্ত্রের উপর কাজ করে, করটিসল এর মাত্রা বৃদ্ধি করে মানসিক চাপ কমিয়ে ভয়জনিত প্যানিক অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা এড়াতে সক্ষম ।

৩। কোলেস্টেরল দূর করেঃ অশ্বগন্ধায় উপস্থিত বহুবিধ বায়োঅ্যাক্টিভ রাসায়নিক পদার্থ মানব শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল Low-density

হাকীম মোঃ আমিরুল ইসলাম 

ডি.ইউ.এম.এস, এম.এম




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top